রকমারী

নোয়াখালীর পুকুরে এক কেজি ওজনের রুপালি ইলিশ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে পুকুরে জেলেদের জালে ধরা পড়েছে এক কেজি ওজনের একটি রুপালি ইলিশ। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার চর ফকিরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভূমিহীন বাজারের মসজিদের পুকুরে ইলিশটি পাওয়া যায়। মিঠা পুকুরের পানিতে ইলিশ মাছটি পাওয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে তাজা ইলিশ দেখতে স্থানীয়রা ভিড় জমান।

জানা যায়, ভূমিহীন বাজারের মসজিদের পুকুরটি স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আবু নাছের সজীব সেচ দিয়ে পানি কমান। পানি প্রায় কমে আসলে জেলেদের জাল দিয়ে মাছগুলো ওপরে তুলেন। এ সময় অন্যান্য মাছের সঙ্গে প্রায় এক কেজি ওজনের একটি রুপালি ইলিশ ধরা পড়ে। মসজিদের পুকুরে ইলিশ মাছ পাওয়ার খবরে মাছটি দেখতে ভিড় জমায় স্থানীয়রা। এরপর জীবন্ত মাছটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে দেওয়ার পর এলাকায় বেশ কৌতূহলের সৃষ্টি হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ আবু নাছের সজীব বলেন, মসজিদের পুকুর সেঁচে মাছ ধরার জন্য পানি কমানোর পর জাল ফেলা হয়েছিল। জালে অন্য মাছের সঙ্গে ইলিশ দেখে আমরা প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। পরে ভালোভাবে দেখে নিশ্চিত হয়েছি এটি ইলিশ মাছ। পুকুরটিতে নদী থেকে এনে কোরাল মাছের পোনা ছাড়া হয়েছিল। পোনা মাছের সঙ্গে ইলিশ মাছটি পুকুরে এসেছে বলেই আমরা ধারণা করছি।

স্থানীয় বাসিন্দা হামিদ রনি বলেন, সাগর-নদীর মাছ পুকুরে দেখে আমরা অবাক হয়েছি। নদীর তীরবর্তী উপজেলা হিসেবে আমরা আগেও জীবন্ত ইলিশ দেখেছি। তবে পুকুরের মিঠা পানিতে এই প্রথম ইলিশ দেখলাম। তবে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের কিছু পুকুরে আমরা ইলিশ মাছ পাওয়ার খবর পেয়েছি। নিঝুম দ্বীপ নিম্নাঞ্চল হওয়ায় জোয়ারে পুকুরগুলো প্লাবিত হয়।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ. আশরাফুল ইসলাম বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাদু পানিতে ইলিশ মাছ কম বাড়লেও একটা সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকে। তবে বাণিজ্যিকভাবে এটি লাভজনক নয়। এ ছাড়া স্বাদু পানিতে ইলিশের স্বাদ ও গন্ধ ঠিক থাকে না। নদীর তীরবর্তী উপজেলা হওয়ায় অন্য মাছের সঙ্গে এ ইলিশ মাছ পুকুরে আসতে পারে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, পুকুরে ইলিশ হয় বিষয়টি এমন নয়। চর ফকিরা ইউনিয়ন নদী বেষ্টিত। জোয়ারের পানি অথবা নদীর মাছের পোনার সঙ্গে পুকুরটিতে ইলিশ এসেছে। এ ছাড়া আলাদা কিছু এখানে নেই।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মোঃ. নাজমুস সাকিব খান বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। ইলিশ মাছ একটি বিচিত্র বৈশিষ্ট্যের মাছ। ইলিশের রেণু কোনো না কোনোভাবে পুকুরে প্রবেশ করেছে। তবে এখন দেশে পুকুরে ইলিশ চাষ নিয়ে গবেষণা চলছে।