রকমারী

অতিথি পাখিতে মুখরিত রানীশংকৈলের রামরায় দিঘি

সফিকুল ইসলাম শিল্পী, রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ দেশের উত্তরে হিমালয়ের কোলঘেঁষা ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈলের রামরায় দিঘিটি অতিথি পাখির কলোরোলে এখন মুখরিত। দুর থেকে দেখলে দিঘির স্বচ্ছ পানিতে কচুরিপানার স্তুপ মনে হয়। আর কাছ থেকে খেয়াল করে দেখলে মনে হবে শতশত অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে এক অন্যরকম দৃশ্য। এরই মধ্যে প্রতিদিন ছুটে আসছে দুর দূরান্ত থেকে আরো অতিথি পাখির দল। কদিন থেকে ভোরে ভোরে প্রচন্ড। সন্ধ্যা নামলেই গায়ে এখন মোটা কাপড় দিতে হয় এ প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে ।

রবিবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকেই ঘন কুয়াশায় উপজেলার পথ ঘাট, নদ নদী ও গ্রাম শহর জুড়ে এখন পুরোদমে শীতের আমেজ বিরাজমান ।এরই মধ্যে দূরের অচেনা কোন দেশ থেকে অতিথি পাখিরা এ উপজেলার অন্যতম প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ রামরায় দিঘিতে তাদের আশ্রয় খুজে নিয়েছে । অবশ্য প্রতিবছর এসময় ছুঁটে আসে খাবারের সন্ধানে এসব অতিথি পাখি৷ দিঘিটি দর্শনীয় হওয়ায় অতিথি পাখি দেখতে দর্শনার্থীদের ভীর প্রতিনিয়ত বাড়ছে । পুরো দিঘির জলাশয় সেজেছে নতুন সাজে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অতিথি পাখি ও জলাশয়ের প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর দর্শনার্থীদের কাছে। প্রতিবছর শীত এলেই এসব পাখি এখানে এসে প্রকৃতিকে সাজায় নতুন সাজে।প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির সমাগম হয়েছে রামরায় দিঘি জুুড়ে। পাখি প্রেমি ও সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত পর্যটন কেন্দ্র’র পাখিগুলোকে দেখার জন্য ছুটে আসেন তাদের পরিবার পরিজনকে নিয়ে। রামরায় দিঘিতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিদিন ঝাঁকে ঝাঁকে থাকছে অতিথি পাখির দল। সন্ধ্যা নামলেই দিঘীপাড়ের বিস্তীর্ণ লিচু বাগানে আশ্রয় নেয় এসব পাখিরা।

ভালোবাসার টানে লক্ষ হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে রাণীশংকৈলের রামরায় দিঘিতে আসে অতিথি পাখিরা। এসব পাখি দেখতে আসা দর্শনার্থীদের অনেকে বলছেন, দিঘির স্বচ্ছ পানিতে ঝাকে ঝাকে অতিথি পাখিদের ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য সত্যিই মনমুগ্ধকর।

নূরুল আলম নামে এক দর্শনার্থী জানান, ‘রামরায় দিঘিটি এখন নতুন ভাবে সাজানো হয়েছে। আগের থেকে এখানকার পরিবেশ অনেক সুন্দর হয়েছে। রামরায় দীঘিতে অতিথি পাখি এসেছে শুনে দেখতে এসেছি। বেশ ভালো লাগলো।আনোয়ারুল ইসলাম নামে পঞ্চগড় থেকে আসা এক ব্যক্তি জানান ‘অতিথি পাখি দেখতেই মূলত: এখানে এসেছি। ভালোই লাগছে। এরপর আমার পরিবারের সদস্যদের

নিয়ে দেখতে আসবো ভাবছি।রামরায় দিঘিটির অবস্থান উপজেলার হোসেনগাঁও ইউনিয়নে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান জানান, ‘এই ঐতিহ্যবাহী পুকুরের পাশেই আমার ইউনিয়ন পরিষদ। এসব অতিথি পাখিদের যেন কেউ কোন ক্ষতি না করতে পারে এ দিকে আমার যথেষ্ট্য নজর রয়েছে। বর্তমানে এসব অতিথি পাখি দেখতে প্রতিদিন প্রচুর দর্শনার্থী ছুটে আসছে। এ দিঘিটির চার পাশ জুড়ে আরোও উন্নত মানের নৈসর্গীক দর্শনীয় কাজ করতে পারলেই দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করছি। রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রকিবুল হাসান বলেন , ‘জেলার সর্ববৃহৎ এ পুকুরে দুর থেকে ছুটে আসা অতিথি পাখিদের সুন্দর একটি অভয়ারণ্য। এসব পাখিদের কোন সমস্যা যেন না হয় আমরা সেদিকে খেয়াল রাখছি। কেউ যেন পাখি শিকার না করতে পারে সে বিষয়ে আমরা সর্বদা নজরদারি করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *