রংপুর বিভাগ

পরিচয় মিলল মস্তকবিহীন নারী দেহের, আটক ১

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি।। রংপুরের পীরগঞ্জে মরিচ ক্ষেতে অজ্ঞাত মহিলার মস্তক বিহীন মৃতদেহের পরিচয় মিলেছে। নিহত মহিলার নামঃ দেলোয়ারা (৩১) তার বাসা পশ্চিম গোলমুন্ডা ফকির পাড়া, জলঢাকা, নীলফামারী পিতার নামঃ মৃত রবিউল ইসলাম ও মাতা- মৃত তমেনা বেগম এছাড়াও তার বর্তমান ঠিকানা জাতীয় পরিচয়পত্র মোতাবেক সাং-দিলালপুর, ফুলপুকুরিয়া, থানা-গোবিন্দগঞ্জ, জেলা-গাইবান্ধা বলে জানিয়েছে রংপুর জেলা পুলিশ।

গত ৭ই ফেব্রুয়ারি সকালে স্থানীয় লোকজন মারফত জানা যায় যে, পীরগঞ্জ থানাধীন ১৪ নং চতরা ইউনিয়নের কাটাদুয়ার মৌজাস্থ বড় বদনাপাড়া গ্রামের জনৈক শাহারুল ইসলাম (৫৩), পিতা-মৃত পানা উল্যাহ শেখ, সাং-বদনাপাড়া এর ভোগদখলীয় জমির দক্ষিন-পশ্চিম কোনায় মরিচ ক্ষেতে একজন অজ্ঞাত মহিলার মস্তক বিহীন মৃতদেহ পড়ে আছে। এরপর সিআইডি, রংপুর ক্রাইম সিন ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহের পরিচয় সনাক্ত করে। এর আগে সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য থানার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জরুরি অফিসার ও ফোর্স দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় ও একজন অজ্ঞাতনামা মহিলার মস্তক বিহীন মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে কিন্তু সে সময় স্থানীয় ব্যক্তিদের জিজ্ঞেসাবাদে কেউ মৃতদেহের পরিচয় সনাক্ত করতে পারেনি।

পুলিশ ও সিআইডি সূত্র জানায়, অজ্ঞাত আসামি বা আসামিরা যোগসাজশ করে গত ৬ই ফেব্রুয়ারী সন্ধা হতে ৭ই ফেব্রুয়ারী সকাল ৭টার পূর্বে যে কোন সময় ভিকটিমকে হত্যা করে মস্তক বিচ্ছিন্ন করে মৃতদেহ ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে অজ্ঞাতনামা স্থানে মাথার অংশটি গোপন করে।

এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার তদন্তকালে পীরগঞ্জ থানার একটি চৌকস টিম ঘটনাস্থল এবং আশপাশে এলাকা তল্লাশিকালে আসামি মোঃ আতিকুল ইসলাম এর বসতবাড়ির পাশে কলাবাগান থেকে একটি ব্যাগ, একটি বস্তা উদ্ধার করে তল্লাশিকালে ব্যাগ ও বস্তার মালামাল থেকে একটি ছবি, সিম কার্ডসহ কাগজে লিখিত কয়েকটি মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়। এরপর তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মৃতার সঠিক পরিচয় সনাক্তের পর গোপন ও প্রকাশ্যে তথ্য বিশ্লেষণ করে আসামি মোঃ আতিকুল ইসলাম অত্র মামলার ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে সত্যতা পায় পুলিশ।

সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল), অতিরিক্ত দায়িত্বে (ডি-সার্কেল) আসিফা আফরোজা আদরী রংপুরের খবরকে জানান মোঃ আতিকুল ইসলাম এর গতিবিধি পর্যাবেক্ষণ করে ৮ই ফেব্রুয়ারি সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে যে, আসামি আতিকুল কালো বোরখা পরিহিত অবস্থায় তার নিজ বাড়িতে এসেছে। সেখানে থানার টিম আসামি আটক অভিযান করাকালে আসামি আতিকুল কৌশলে পালানোর চেষ্টাকালে অজ্ঞাত লোকের আবাদি ধানের জমিতে তাকে আটক করে। আটককৃত আসামিসহ থানায় এসে মামলার ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৪ নং চতরা ইউপির করতোয়া নদীর কিনারে টোংরার দও নামক স্থান থেকে মৃতা দেলোয়ারা’র খন্ডিত মস্তক উদ্ধার করা হয়। মামলাটির মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।