খুলনাকে হারিয়ে তিনে কুমিল্লা
ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের জনপ্রিয় টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ষষ্ঠ ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলে তিনে উঠলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ৩৪ রানে হারায় খুলনাকে। আগে ব্যাট করে অধিনায়ক লিটন কুমার দাস এবং ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ানের দারুণ ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪৯ রান তোলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। জবাবে পাকিস্তানি পেসার আমের জামালের বিধ্বংসি বোলিং তোপে পড়ে ১৮.৫ ওভারে মাত্র ১১৫ রানে অলআউট হয় খুলনা টাইগার্স। ফলে দারুণ জয়ে কুমিল্লা তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠলেও চতুর্থ স্থানে নেমে গেল খুলনা। ছয় ম্যাচ শেষে চার জয় ও দুই হারে কুমিল্লার সংগ্রহ ৮ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে সমান জয়-পরাজয়ে ৮ পয়েন্ট পেলেও রান রেটে পিছিয়ে থেকে কুমিল্লার নীচে নামলো খুলনা। টানা চার ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছিল লিগে দারুণ ছন্দে থাকা খুলনা টাইগার্স। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে ফরচুন বরিশাল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে হেরে এখন কিছুটা কোণঠাসা অবস্থায় আছে দলটি।
কাল টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লার অধিনায়ক লিটন দাস। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দারুণ করেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও লিটন দাস। বিপিএলের চলমান আসের আগের পাঁচ ম্যাচে নামের প্রতি সুবিচার করে খেলতে না পারলেও ষষ্ঠ ম্যাচে ঠিকই ছন্দে ফেরেন লিটন। আগের ম্যাচগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ রান ছিল ১৪। অথচ কাল রিজওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে লিটন গড়েন ৬৯ রানের জুটি। ৩০ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৫ রানের ইনিংস খেলে ড্রেসিংরুমে ফেরেন কুমিল্লার অধিনায়ক। সঙ্গীকে হারিয়ে রিজওয়ানও দ্রুত আউট হন। এ ম্যাচই ছিল এবারের বিপিএলে রিজওয়ানের শেষ ম্যাচ। চলতি আসরে কোনো ম্যাচেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি এই পাকিস্তানি ব্যাটার। ৫ ম্যাচ খেলা রিজওয়ানের কাছ থেকে খুলনার বিপক্ষেই এসেছে সর্বোচ্চ ২১ রানের ইনিংস। শুরুটা ভালো হলেও দুই ওপেনারের বিদায়ের পর কুমিল্লার রানের গতি সেভাবে বাড়েনি। তবে উইল জ্যাক (২২), তাওহীদ হৃদয় (১৬) ও জাকের আলী অনিকের (১৮) ইনিংসের ওপর ভর করেই কুমিল্লা শেষ পর্যন্ত দেড়শ’র কাছাকাছি যেতে পেরেছে। যদিও এই সংগ্রহ তুলতে তাদেরকে খোয়াতে ৭ ব্যাটার। খুলনার বোলারদের মধ্যে নাসুম আহমেদ ২১ ও ফাহিম আশরাফ ২৫ রানে পান ২টি করে উইকেট।
১৫০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৫০ এর আগেই ৫ উইকেট হারায় খুলনা। মূলত খুলনা ব্যাটিংয়ে ধ্বস নামান পাকিস্তানি পেসার আমের জামাল। তিনি চার ওভার বল করে মাত্র ২৩ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরা হন। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই খুলনা খেই হারালেও শেষ দিকে মোহাম্মদ ওয়াসিমের কিছু ছক্কা দর্শকদের আনন্দ দেয়। তবে বাকি সময়টাতে ম্যাড়ম্যাড়ে ম্যাচই উপভোগ করেন দর্শকরা। টপ টু লোয়ার অর্ডার- সবার ব্যাটিং ব্যর্থতায় মামুলি সংগ্রহ তুলেই অলআউট হয় এনামুল হক বিজয়ের দল। ১২ বল খেলে ৩ ছক্কা ও ১ চারের মারে সর্বোচ্চ ২৩ রানের ইনিংস খেলেন ওয়াসিম। নাহিদুল ইসলাম ২৪ বলে দুই বাউন্ডারির মারে করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান। আর অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় ১২ বলে ৩ চার ও এক ছক্কার মারে ১৯ রান করেন। কুমিল্লার আমের জামালের ‘ফাইফারে’র ছাড়াও তানভীর ইসলাম ২৯ রানে পান ২টি উইকেট।