শিক্ষা

শিক্ষা কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কর্মসূচি ঘোষণা

জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম ২০২১ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) জেলা ও মহানগরে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দীন খান প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘এই সেমিনার ঘুমন্ত জাতিকে জাগ্রত করেছে। শিক্ষা কারিকুলামে ইসলামী শিক্ষা না থাকলে আমরা জান দিয়ে তা প্রতিরোধ করব। এই শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে দেশ ও সমাজ গঠন করা তো দূরের কথা, পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংস হবে। এতে শান্তি আসবে না। এই শিক্ষা কারিকুলাম শিক্ষক ও অভিভাবকরা মানেন না। এটি প্রত্যাখ্যান করলাম।’

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইয়াকুব হোসেন বলেন, ‘২০১৯ পর্যন্ত শিক্ষানীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা আনার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা তা দিইনি। চরমোনাই পীরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আজই আন্দোলনের খসড়া কর্মসূচি দিন। আমি ৩৭টি শিক্ষা কমিশন পড়েছি। কিন্তু আলোর মুখ দেখেছে ২০১০ সালে। সাধারণ ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের সমন্বয়ে শিক্ষা কমিশন ও শক্তিশালী কারিকুলাম কমিটি করে দিন।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, দেশ ও শিক্ষা সংস্কৃতি ধ্বংস হতে দিতে চাই না। আমাদের শিক্ষা থেকে স্বকীয়তা উঠিয়ে দিয়ে বিপরীতমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আসা হয়েছে। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে পার্থক্য তুলে দিতে চান। এটা হিন্দু ও মুসলমান উভয়ের জন্য ভয়ংকর বিষয়।’

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, ইসলামী জনতার একটি বিপরীত শক্তি ক্ষমতায় আছে। এই সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশের কারিকুলাম প্রস্তুত করতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের মতামত নেয়া দরকার ছিল। রাষ্ট্র যদি আমাদের মৌলিক অধিকার মেনে শিক্ষা কারিকুলাম প্রস্তুত করা হলে আজকের সেমিনারের প্রয়োজন হতো না। আমার সন্তানকে ইসলামবিমুখ শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য প্রতিষ্ঠানে দিইনি। আমাদেরকে সংখ্যালঘু বানানোর কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নিতে পারি না।’

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চরমোনাই আলিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চরমোনাই কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস, লেখক গবেষক ও কলামিস্ট মুসা আল হাফিজ, শিক্ষক ও গবেষক ড. সরোয়ার হোসেন প্রমুখ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল প্রভাষক আবদুস সবুর।