রংপুর-কাকিনা সড়কে নিম্নমানের কাজ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বুড়িরহাট-কাকিনা আঞ্চলিক সড়কের নির্মাণ কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সড়ক অবরোধ ও নিম্নমানের কাজ বন্ধ করে সরকারি সিডিউল অনুযায়ী সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা। অন্যথায় গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক রক্ষায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে গঙ্গাচড়া উপজেলার হাবু বালারঘাট বাজারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পার্শ্ববর্তী দুই ইউনিয়নের শত শত নারী-পুরুষ অংশ নেন। এসময় তারা মানববন্ধন শেষে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
এসময় বক্তারা বলেন, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ‘গ্রামীণ সড়ক’ মেরামত ও সংরক্ষণের আওতায় বুড়িরহাট থেকে কাকিনা পর্যন্ত আরএইচডি সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করা হচ্ছে। সরকারি সিডিউল অনুযায়ী সড়ক নির্মাণ না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন নিম্নমানের বালু-মাটি-খোয়া ব্যবহার করছে। এখন পর্যন্ত যতটুকু কাজ হয়েছে, তা এই সড়ক রক্ষায় কখনো টেকসই হবে না। একাধিকবার অনুরোধ এবং সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ করেও স্থানীয়রা এই অনিয়ম থামাতে পারেনি।
বক্তারা আরও বলেন, বুড়িরহাট-কাকিনা সড়কটি রংপুর-লালমনিরহাট জেলার মানুষের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়ক ধরে মহিপুরের শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু হয়ে প্রতিদিন দুই জেলার শতশত গাড়ি চলাচল করে। হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে আসছে। যদি এখুনি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে
চলমান সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ না হয় তাহলে সরকারের অর্থের অপব্যয় এবং অপচয় ছাড়া কিছুই হবে না। কোথাও নিয়ম অনুযায়ী সিডিউল সাইনবোর্ড সাঁটানো নেই। কে বা কারা এই সড়কের কাজ করছে তার কোনো হদিস নেই। যারা শ্রমিক তারাও সঠিক তথ্য দেননা। আমরা নিরুপায় হয়ে এলাকাবাসী আজ সড়কে নেমে এসেছি। যদি সিডিউল অনুযায়ী সঠিকভাবে নির্মাণ কাজ করা না হয়, তাহলে আগামীতে বৃহত্তর কর্মসূচি দেয়া হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- সাবেক ইউপি সদস্য রফিজ উদ্দিন, গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান লিজু, যুবনেতা মুর্শিদ জাহান বুলেট প্রমুখ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রংপুর-লালমনিরহাট জেলার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রধিকার প্রকল্পের হিসেবে বুড়িরহাট-কাকিনা সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। এছাড়া চলাচলে অনুপযোগী বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক সংস্কার কাজও শুরু হয়। এ কাজের জন্য প্রায় ৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধীর গতিতে ও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে গঙ্গাচড়া উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মজিদুল ইসলাম জানান, কোথাও যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে সেটা অবশ্যই তদন্ত হবে। কয়েকটি ধাপে এই নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আমাদের কর্মকর্তারা কাজের তদারকিও করছেন।
অন্যদিকে সড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান জানান, এলাকাবাসী জমায়েত হয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেছিল। পরে সেখানে পুলিশ পাঠানো হলে তারা সড়ক থেকে সরে যান। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।