ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিমান হামলা
ডেস্ক: লোহিত সাগরে জাহাজে ইরান-সমর্থিত হুথি বাহিনীর কয়েক সপ্তাহের ধ্বংসাত্মক হামলার পর শুক্রবার ভোরে বিদ্রোহী অধ্যুষিত ইয়েমেনের বিভিন্ন স্থাপনায় মার্কিন ও ব্রিটিশ বিমান ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে।
হুথি বিদ্রোহীদের ‘আল-মাসিরাহ টিভি’ স্টেশন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ বিমান একটি বিমানঘাঁটি, বিমানবন্দর ও সেনাবহিনীর একটি ক্যাম্পকে লক্ষ্য করে ভয়াবহ হামলা চালায়। এএফপি’র সংবাদদাতা ও প্রত্যক্ষদর্শীরাও বোমা হামলার কথা জানিয়েছে। হুথি’র উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুসেন আল-ইজি’র উদ্ধৃতি দিয়ে বিদ্রোহীদের মিডিয়া জানায় ‘আমাদের দেশ আমেরিকান ও ব্রিটিশ জাহাজ, সাবমেরিন ও যুদ্ধবিমান দ্বারা ব্যাপক হামলার শিকার হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমেরিকা ও ব্রিটেনকে এর জন্য চরম মূল্য দিতে হবে এবং এই নির্লজ্জ আগ্রাসনের ভয়াবহ পরিণতি বহন করতে হবে।’ খবর এএফপি’র।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অযাচাইকৃত ছবির মধ্যে কিছু সানার উত্তরে আল-দাইলামি বিমানঘাঁটির কথিত বিস্ফোরণ গুলোকে আকাশে আলোকিত করে দেখায় এবং বিমানের গর্জন শোনা যায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লোহিত সাগরে হামলার পর মার্কিন ও ব্রিটিশ হামলাকে একটি ‘প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, প্রয়োজনে তিনি আরও সামরিক পদক্ষেপের নির্দেশ দিতে ‘সঙ্কোচবোধ করবেন না।’ বেশ কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হামলায় যুদ্ধবিমান ও টমাহক ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। এএফপি’র সাথে যোগাযোগ করা হলে মার্কিন কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করেন নি।
বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘হুথি বিদ্রোহীদের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে মার্কিন সামরিক বাহিনী আজ আমার নির্দেশে যুক্তরাজ্যের সাথে অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের সমর্থনে ইয়েমেনে হুথিদের ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি স্থাপনায় সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলপথে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নৌ পথে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহারসহ এই হামলাকে তিনি হুথিদের ‘নজীরবিহীন’ হামলার ‘সরাসরি প্রতিক্রিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘হুথিদের হামলা মার্কিন সেনাবহিনী, বেসামরিক নাবিক এবং আমাদের অংশীদারদের বিপন্ন করেছে। বাণিজ্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং নৌ চলাচলের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।’
বাইডেন বলেন, ‘আমাদের জনগণকে রক্ষার জন্য ও প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অবাধ প্রবাহ রক্ষার্থে আমি আরও ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করব না।’যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এক বিবৃতিতে বলেছেন, হামলাগুলো ছিল ‘প্রয়োজনীয় ও সঙ্গতিপূর্ণ।’
যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা, ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এর উদ্দেশ্য ছিল উত্তেজনা কমানো ও লোহিত সাগরে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা।