হেঁটে ছেঁড়াদ্বীপ থেকে তেঁতুলিয়ায় জাফর
জেলা প্রতিনিধি, পঞ্চগড় :
নিরাপদ সড়কের সচেতনতা তৈরির লক্ষে পায়ে হেঁটে দক্ষিণের ছেঁড়াদ্বীপ থেকে উত্তরের তেঁতুলিয়া ভ্রমণ করলেন জাফর সাদেক নামের এক ভ্রমণচারী।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টে এক হাজার কিলোমিটার হেটে এ ভ্রমণ শেষ করেন জাফর সাদিক। এ সময় বাংলাবান্ধায় অবস্থান করে জাফর সাদিকের সহকর্মীরা। দীর্ঘপথ ভ্রমণ শেষে তারা অভ্যত্থনা জানান এ ভ্রমণচারীকে।
রূপালী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জাফর সাদেক। পেশায় ব্যাংকার হলেও নেশায় হয়ে উঠেছেন একজন অভিযাত্রী। পৃথিবীর সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ পর্বতে অভিযানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই ভ্রমনযাত্রা তার। ইতিমধ্যে ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বত এলব্রুস এবং আফ্রিকা মহাদেশের সর্বোচ্চ পর্বত কিলিমানজারোসহ হিমালয়ের বেশ কিছু পর্বতে অভিযান করেছেন এই অভিযাত্রী।
জাফর সাদেক বলেন, ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ১৬.১ কিলোমিটার সমুদ্র পথ সাঁতরে পাড়ি দেওয়ার মধ্য দিয়ে এ ভ্রমণ শুরু করি। টানা ২১ দিনে হেঁটেছি ১৩টি জেলা। কক্সবাজার চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়। আজ বাংলাদেশের উত্তরের তেঁতুলিয়ায় ১ হাজার কিলোমিটার হেঁটে ভ্রমণ শেষ করেছি।
জাফর সাদেক জানান, প্রথম দিন ছেঁডাদ্বীপ থেকে টেকনাফের শাহপরী দ্বীপ পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার পথ হাঁটি ও সাঁতারের মাধ্যমে পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিনে একরাত বিশ্রাম নিই। ছুটির দিনগুলো কাজে লাগিয়ে ১১ দিনে ঢাকার আবদুল্লাপুর পৌছে যাই। রোজা, তাপপ্রবাহ বৃদ্ধি আর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে কয়েক মাস বিরতির পর ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে আবার ভ্রমণ শুরু করে ১০ দিনে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টে শেষ করি আমার পদযাত্রা।
জাফর সাদেক আরও বলেন, দীর্ঘ পথযাত্রায় অনেক বিশৃঙ্খলা চোখে পড়েছে মহাসড়কে। হাটতে হাটতে পরিচয় হয়েছে নানা শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে নিরাপদ সড়ক বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করার চেষ্টা করেছি। আমাদের এই জনবহুল দেশে মহাসড়কগুলো যেন এক মরণফাঁদ। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। চলার পথে এমন ঘটনা চোখের সামনে ঘটতে দেখেছি। মহাসড়কের পাশে যাদের বসবাস তাদের চলাচলের জন্য অধিকাংশ স্থানেই কোন রাস্তা নেই। তাই বাধ্য হয়ে মহাসড়কে অটোরিক্সা, সিএনজিসহ সব ধরনের যানবাহন চলছে। এর ফলে দূরপাল্লার যানবাহন চলার পথে বাঁধাপ্রাপ্ত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কের পাশে সার্ভিস লেন থাকলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এতে স্থানীয় মানুষের চলাচলের সুবিধার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়ক থেকে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। দুর্ঘটনা রোধে ট্রাফিক আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। আমার এ পথযাত্রার অন্যতম লক্ষ্যই হচ্ছে নিরাপদ সড়ক চাওয়া। যাতে মানুষ নিরাপদে বাঁচে। সুস্থ্যতার জন্য মানুষ প্রতিদিন হাটে। ব্যায়াম করে। জীবনের জন্য ভ্রমণ করে নিজেদের জানাতে পারে।