সৌম্য-মাহমুদউল্লাহ ঝড়ে চারে বরিশাল, টানা আট হারে ঢাকার রেকর্ড
সৌম্য সরকার ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাটিং নৈপুন্যে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পয়েন্ট টেবিলের চতুর্থস্থানে উঠলো তামিম-মুশফিকের ফরচুন বরিশাল। আজ নিজেদের অষ্টম ম্যাচে বরিশাল ৪০ রানে হারিয়েছে দুর্দান্ত ঢাকাকে।
৮ খেলায় অংশ নিয়ে সমান ৪টি করে জয়-হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থানে উঠলো বরিশাল। ৭ খেলায় বরিশালের সমান ৮ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে পঞ্চমস্থানে নেমে গেল খুলনা টাইগার্স। ঢাকা ৯ খেলায় ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতেই থাকলো।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে যাত্রা শুরু করা ঢাকা এ নিয়ে হারল টানা ৮ ম্যাচ। বিপিএল ইতিহাসে টানা হারের রেকর্ড এটি। এত দিন এই বিব্রতকর কীর্তি ছিল সিলেট রয়্যালসের। ২০১২ সালে প্রথম আসরে শুরুর সাত ম্যাচ হেরেছিল তারা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৯ রানেই ৩ উইকেট হারায় বরিশাল। ওপেনার তামিম ইকবালকে ৪ রানে ফিরিয়ে দেন পেসার শরিফুল ইসলাম। পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদকে ১০ এবং মুশফিকুর রহিমকে ১ রানে শিকার করেন ঢাকার অধিনায়ক ও পেসার তাসকিন আহমেদ।
শুরুর ধাক্কা সামলে উঠতে চতুর্থ উইকেটে শক্ত হাতে হাল ধরেন সৌম্য সরকার ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ১৩তম ওভারে দলের রান ১শতে পৌঁছে দিয়ে ৩২ বলে এবারের আসরে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি করেন ৭ রানে জীবন পাওয়া সৌম্য।
১৫তম ওভারে চলতি আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি করেন ৩৭ বল খেলা মাহমুদুল্লাহ। জোড়া হাফ-সেঞ্চুরির পরও ইনিংস বড় করছিলেন সৌম্য ও মাহমুদুল্লাহ। ১৭তম ওভারে সৌম্য ও মাহমুদুল্লাহ থিতু হওয়া জুটি ভাঙেন শরিফুল। ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪৭ বলে ৭৩ রানে আউট হন মাহমুদুল্লাহ। ৮৫ বল খেলে বিপিএলে চতুর্থ উইকেটে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩৯ রান যোগ করেন সৌম্য মাহমুদুল্লাহ।
মাহমুদুল্লাহর বিদায়ের পর পাকিস্তানের শোয়েব মালিককে নিয়ে বরিশালকে ৪ উইকেটে ১৮৯ রানের বড় সংগ্রহ এনে দেন সৌম্য। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১০ বলে অপরাজিত ১৯ রান করেন মালিক। সৌম্যর ৪৮ বলে সাজানো ৭৫ রানের ইনিংসে ৪টি চার ও ৬টি ছক্কা ছিলো। ঢাকার পক্ষে তাসকিন ও শরিফুল ২টি করে উইকেট নেন।
১৯০ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৪১ রানে ৩ উইকেট হারায় ঢাকা। সাব্বির হোসেন ৫, মোহাম্মদ নাইম ১০ ও সাইফ হাসান ১২ রানে আউট হন।
চতুর্থ উইকেটে ৩৭ বলে ৩৯ রানের জুটিতে দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্স রস ও এসএস মেহেরব। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৯ বলে ২৮ রান করা মেহেরবকে শিকার করে জুটি ভাঙেন স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রানে অলআউট হয় ঢাকা। এক প্রান্ত আগলে লড়াকু ইনিংস খেলেন ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩০ বলে ৫২ রান করা রস। বরিশালের মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ২১ রানে ৩টি উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৮৯/৪ (শেহজাদ ১০, তামিম ৪, সৌম্য ৭৫*, মুশফিক ১, মাহমুদউল্লাহ ৭৩, মালিক ১৯*; মেহেরব ১-০-৭-০, শরিফুল ৪-০-৩৬-২, তাসকিন ৪-০-৩৫-২, সামারাকুন ৪-০-৪৪-০, চাতুরাঙ্গা ৪-০-২৮-০, আরাফাত ১-০-১৪-০, সাব্বির ২-০-২৩-০)
দুর্দান্ত ঢাকা: ১৯.৪ ওভারে ১৪৯ (সাব্বির ৫, নাঈম ১০, সাইফ ১২, রস ৫২, মেহেরব ২৮, চাতুরাঙ্গা ৪, তাহজিবুল ৭, সামারাকুন ০, তাসকিন ১২, শরিফুল ৭, আরাফাত ১*; মিরাজ ২.৪-০-১৭-২, আকিফ ৪-০-৪৭-১, ম্যাকয় ৪-০-১৯-২, তাইজুল ২-০-২২-০, সাইফউদ্দিন ৪-০-২১-৩, সৌম্য ৩-১-২১-০)
ফল: ফরচুন বরিশাল ৪০ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: সৌম্য সরকার