লালমনিরহাট হানাদার মুক্ত দিবস আজ
লালমনিরহা ট প্রতিনিধি : লালমনিরহাট পাক হানাদার মুক্ত দিবস আজ । ১৯৭১ সালের এই দিনে লালমনিরহাট হানাদার মুক্ত হয়। দিবসটি উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তোরণ নির্মাণ ও আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
এইদিন ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও বীরমুক্তিযোদ্ধারা লালমনিরহাট শহরকে পাক হানাদার মুক্ত করতে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে আক্রমণ চালায়। তাদের যৌথ আক্রমণে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বিপর্যয়ের মুখে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরাজয় নিশ্চিত জেনে লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে পাক হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও তাদের দোসর অবাঙালিরা দুটি স্পেশাল ট্রেন যোগে রংপুর ও সৈয়দপুরে পালিয়ে যায়। ফলে লালমনিরহাট জেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়।
তবে এর আগের দিন ৫ ডিসেম্বর’৭১ সন্ধ্যায় লালমনিরহাট রেলওয়ে রিকশা স্ট্যান্ডে পাক হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের যোগ সাজসে গণহত্যা চালানো হয়। এ সময় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী, বুদ্ধিজীবীসহ ৩৭৩ জন নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যা করে পাক হানাদার বাহিনী। পরে গণহত্যায় নিহত লোকদের রেল স্টেশনের দক্ষিণ পাশে একটি ডোবায় ফেলে দেয়। বর্তমানে সেখানে গড়ে উঠেছে একটি গণকবর।
৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পাক বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় এ জেলা। স্বাধীন বাংলা পতাকা উত্তোলন করে লালমনিরহাট জেলাকে শক্রমুক্ত ঘোষণা করা হয়। পরদিন ৭ ডিসেম্বর বাঁধ ভাঙা জোয়ারের মতো মানুষ জয় বাংলা ধ্বনি দিয়ে ও বিজয়ের পতাকা নিয়ে ঢুকে পড়ে শহরে। মিলিটারি ফোর্স, সশস্ত্র গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা স্বাধীনতাকামী মানুষদের নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠেন।
লালমনিরহাট অঞ্চল ছিল ৬ নম্বর সেক্টরের অধীনে। দেশের অভ্যন্তরে থাকা ৬ নম্বর সেক্টরটি ছিল পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন এম. খাদেমুল বাশার। তার দক্ষ নেতৃত্বে ও সাহসী পদক্ষেপেই লালমনিরহাটে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ৬ ডিসেম্বর লালমনিরহাট মুক্ত দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যালির আয়োজন করা হয়েছে। অবিস্মরণীয় এই দিন যথাযথভাবে উদযাপনের জন্য লালমনিরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাংবাদিক ও জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।