রোহিঙ্গাদের ফেরাতে তড়িঘড়ি চুক্তি ঠিক হয়নি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ডেস্ক রিপোর্ট :
গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরানো এখন সম্ভব হবে না বলে মনে করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট এখনই খুবই জটিল। দ্রুতই এর সমাধান হবে না। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে তড়িঘড়ি করে চুক্তি সই ঠিক হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকায় বাংলাদেশের রোহিঙ্গা নীতির প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য বিষয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ইস্কাটনের বিআইআইএসএস মিলনায়তনে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি) এ সংলাপের আয়োজন করে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আওয়ামী লীগ সরকারের নীতির সমালোচনা করে তৌহিদ হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা নিয়ে বিগত সরকারের চুক্তি অকার্যকর ছিল। একটা দীর্ঘমেয়াদী ও স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রোহিঙ্গা ইস্যু বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ভুলে যেতে দেওয়া যাবে না যে, রোহিঙ্গা এখনও আছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন যেন মিয়ানমারের জন্য লাভজনক হয় সেই পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করতে হবে আর তারা তা না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেজন্য আমাদের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়ে এগোতে হবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন যেন মিয়ানমারের জন্য লাভজনক হয় সেই পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে মিয়ানমার তাদেরকে খুশি মনে মেনে নেয়।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনের কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে কখনোই জাতীয় ঐক্যমত ছিল না। যে সরকারই থাকুক, একদল নেমেছে এবং একদল মানেনি। আমার আর্জি, আপনারা যখন ক্ষমতার আসবেন, এই চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন, আমরা এক হতে পারলে আমাদের শক্তি আরও বেড়ে যাবে।
আরাকান আর্মির সাথেও সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, কারণ মিয়ানমারে তাদের বড় অংশীদারিত্ব রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না, তবে কেউ গায়ে পড়লে যাতে তার জবাব দিতে পারি তার প্রস্তুতি রাখতে হবে।
সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন। বিএনপি পূর্বেই এই ইস্যুতে ঐক্যের জন্য প্রস্তুত ছিল। কিন্তু বিগত সরকার তা গ্রহণ করেনি।
তিনি বলেন, মানবিকতা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান (কৃষি খাতে), দেশ অভ্যন্তরীণভাবে দুর্বল হলে আন্তর্জাতিক নেগোসিয়েশন করা অসম্ভব, তাই আমাদের অভ্যন্তরীণ শক্তি বাড়াতে হবে।