রংপুর বিভাগ

রংপুরে ২২৭৫ হেক্টর জমিতে গম আবাদ

রংপুরে চলতিে মৗসুমে ২২৭৫ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। এ বছর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি গমের বাজার বেশি থাকায় কৃষকরা লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি মার্চ মাসের শেষ নাগাদ জমি থেকে গম কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ সম্পন্ন বলে আশা করা হচ্ছে।

রংপুর জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন জানান, বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার কৃষি বিভাগের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করায় ফসল উৎপাদনে কৃষকের আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।  ফসল উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ রংপুর জেলায় চলতি  ২০২৩-২০২৪ রবি মৌসুমে ২২৭৫ হেক্টর জমিতে এবার গম চাষ হয়েছে। জেলার ৮টি উপজেলা ও মেট্রো এলাকায় চলতিে মৗসুমে মেট্রো এলাকায় ৩০ হেক্টর জমিতে, সদর উপজেলায় ৩০৭ হেক্টর জমিতে, কাউনিয়া উপজেলায় ২৫৬ হেক্টর জমিতে, গঙ্গাচড়া উপজেলায় ১৯০ হেক্টর জমিতে, মিঠাপুকুর উপজেলায় ৩৩০ হেক্টর জমিতে, পীরগঞ্জ উপজেলায় ৩৬০ হেক্টর জমিতে, পীরগাছা উপজেলায় ১৮৫ হেক্টর জমিতে, বদরগঞ্জ উপজেলায় ১৬৭ হেক্টর জমিতে, তারাগঞ্জ উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিসহ সর্বমোট ২২৭৫ হেক্টর জমিতে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল।

তিনি জানান, মেট্রো এলাকায় ১০৮ মেট্রিকটন, সদর উপজেলায় ১১০৫ মেট্রিকটন, কাউনিয়া উপজেলায় ৯২২ মেট্রিকটন, গঙ্গাচড়া উপজেলায় ৬৮৪ মেট্রিকটন, মিঠাপুকুর উপজেলায় ১১৮৮ মেট্রিকটন, পীরগঞ্জ উপজেলায় ১২৯৬ মেট্রিকটন, পীরগাছা উপজেলায় ৬৬৬ মেট্রিকটন, বদরগঞ্জ উপজেলায় ৬০১ মেট্রিকটন, তারাগঞ্জ উপজেলায় ১৬২০ মেট্রিকটনসহ সর্বমোট ৮১৯০ মেট্রিকটন উৎপাদন অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

রবি মৌসুমে গম চাষী উপজেলার বড়দরগাহ ইউনিয়নের সাহাপাড়া হাজিপুরের আব্দুল কাফি মিয়া, রুহুল আমিন, মোস্তফা, ওবাইদুর রহমান, জিয়াউর রহমান, রওশন আলী, আনোয়ার হোসেন জানান, ৫০ শতকের এক বিঘা জমিতে আমরা গম আবাদ করেছি। এ বছর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো মুনাফার আশা করছি। কৃষকরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে গম আবাদে খরচ হয়েছে ১৫/১৬ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ১৪/১৫ মণ গম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান বাজার মুল্য অনুযায়ী প্রতি মণ গম ১৫০০/১৬০০ টাকায় বিক্রি হলে বিঘা প্রতি ৮/১০ হাজার টাকা লাভ হবে। স্বল্প সময়ে ১১০/১২০ দিনের মধ্য গমের বীজ বপন ও কাটা-মাড়াই সম্ভব হয়। এছাড়াও উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিঘা প্রতি ২ কেজি বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও  ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে পাওয়া গেছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান সরকার জানান, কৃষি বান্ধব সরকারের কৃষি ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে নানামুখী তৎপরতা ও স্থানীয় সাংসদ স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী’র পরামর্শ ও উদ্যোগে এবং স্থানীয় কৃষি বিভাগের কৃষক উদ্বুদ্ধকরণ এর ফলে বিভিন্ন ফসল চাষে উৎপাদন এলাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ মৌসুমে উপজেলার ১৮ হাজার ২০০ জন কৃষককে প্রণোদনা আওতায় ধান, গম, ভুট্টা, সরিষাসহ বিভিন্ন ফসলের বীজ ও বিনামূল্যে সার সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৫০ জন কৃষককে গম আবাদে বিঘা প্রতি বীজ ও বিনামুল্যে সার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও গম ফসল পরিবেশ বান্ধব পানি সাশ্রয়ী ফসল। পানি সেচ কম লাগে বলে খরচ কম।

জেলার রংপুর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান,কৃষি বান্ধব সরকারের নানামুখী তৎপরতাসহ প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ কার্যক্রমসহ মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা। এতে কৃষকরা বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছে। পীরগঞ্জসহ অত্র অঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় নানা ফসল চাষ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যথাযথ বাজার ব্যবস্থাপনা করতে পারলে কৃষকরা লাভবান হলে সব ধরনের ফসল উৎপাদনে কৃষকদের আগ্রহ দিনে দিনে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।