রংপুরে বর্ষবরণে বিভিন্ন আয়োজন, বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা
বর্ণিল আয়োজন ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় রংপুরে আজ বাংলা নববর্ষ উদ্যাপিত হয়েছে। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে সারাদেশের মতো প্রাণের উৎসবে মেতে উঠেছে বিভাগীয় নগরী রংপুর।
জেলা প্রশাসন রংপুরের উদ্যোগে আজ সকাল ৮টায় জিলা স্কুলের বটতলায় জাতীয় সংগীত, এসো হে বৈশাখ গান পরিবেশন ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্যদিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর ১০টায় শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রার পর স্কুল মাঠেই ঐতিহ্যবাহী কাবাডি খেলার উদ্বোধন করা হয়। পরে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম জিলা স্কুল মাঠের বটতলা থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এ শোভাযাত্রাটি জিলা স্কুল মাঠ থেকে বের হয়ে নগরীর কাচারি বাজার, টাউনহল, সিটি বাজার, পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানি মোড় হয়ে পুনরায় জিলা স্কুল মাঠের বটতলায় গিয়ে শেষ হয়।
নগরবাসীর নজর কাড়তে শোভাযাত্রায় ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা, জেলে, কামার কুমোর, লাঙ্গল-জোয়াল ও বিয়ের পালকি সাজিয়ে রঙিন পোশাকে, বাদ্যযন্ত্রের তালে, গানে গানে আবহমান গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হয়। এ সময় শোভাযাত্রাটি দেখতে রাস্তার দুই পাশে উৎসুক জনতা ভিড় করে।

বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, পুলিশ সুপার মো. আবু সাইমসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জেলার সকল শ্রেণি পেশার মানুষ এ শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
এদিকে সাংস্কৃতিক ঐক্য পরিষদ রংপুরের উদ্যোগে টাউনহল চত্বর থেকে বৈশাখি পোশাকে বর্ণিল আয়োজনে আরেকটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। টাউনহল চত্বর থেকে বের হয়ে শোভাযাত্রাটি জেলা প্রশাসনের শোভাযাত্রার সাথে যুক্ত হয়।
সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসনের শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে সাহিত্য সাংস্কৃতিক কর্মীরা টাউনহল চত্বরে ফিরে আসে। উত্তরাঞ্চলের সাহিত্য সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র টাউনহল চত্বরে সকাল ৭টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বর্ষবরণের অনুষ্ঠান।
পরে টাউনহল মাঠে বিসিকের আয়োজনে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী নানা আয়োজনে উদ্যাপিত হয় পহেলা বৈশাখ।
ব্যতিক্রমী আয়োজনের মধ্যদিয়ে দুই দিনব্যাপী বর্ষবরণের আয়োজন করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সকাল সোয়া ৯টায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে। আনন্দ শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে বৈশাখি মেলার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ব্যাপক আয়োজনে ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বাংলা বর্ষবরণে গ্রামীণ মেলা, ঘুড়ি উৎসব, মিলন উৎসব, চিত্রকর্ম প্রদর্শনী, বৈশাখি মেলা, খেলার আসরের আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি বাংলা বছরের প্রথম দিন পর্যটক আকর্ষণ করতে চিরাচরিত বাংলার আবহে সাজানো হয়েছে চিকলী ওয়াটার পার্ক, ভিন্নজগত, গ্র্যান্ড প্যালেসসহ অভিজাত হোটেল, বিনোদন পার্কসহ স্থানীয় ক্লাব প্রাঙ্গণ।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
সূত্র – বাসস