রংপুরে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি
নগর প্রতিবেদক : রংপুরে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এক সাংবাদিককে কাফনের কাপড়সহ ২টি চিঠি পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে কুরিয়ার সার্ভিসের পার্সেল পাওয়ার পর এ ঘটনা জানা যায়।
হত্যার হুমকি পাওয়া সাংবাদিকের নাম মাহমুদুল হাসান। তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের রংপুর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।
দুটি চিঠির একটিতে লেখা, ‘ভাটার মালিকদের কাজই আগুন নিয়ে খেলা। তোর সময় শেষ। রংপুর, মিঠাপুকুর এরমধ্যে সুবিধা মতো পাইলেই খেল খতম। অপেক্ষার প্রহর গোনা শুরু।’
অপর আর একটি চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি তোর কারণে। এবার আমার খেলা শুরু। ঠিক মতো পছন্দের মতোন খেয়ে নে হারামখো।’ চিঠির মধ্যে দাফনের কাপড়ও দেওয়া হয়েছে।
কুরিয়ার সার্ভিসের পার্সেলে কাফনের কাপড় ও চিঠিগুলো গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও রংপুরের গঙ্গাচড়া থেকে পাঠানো হয়েছে। প্রেরকের ঠিকানায় পীরগঞ্জের আরেক সাংবাদিক মিলনের নাম ও ফোন নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। এ নিয়ে মাহমুদুল হাসান জানান, মঙ্গলবার (আজ) বিকেলে কুরিয়ারে তার নামে পার্সেল আসে। এতে দুটি দাফনের কাফনের কাপড়ের সঙ্গে দুটি প্রিন্ট করা চিঠি ছিল। চিঠিতে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। পীরগঞ্জের এক ইটভাটার মালিক ও ইউপি চেয়ারম্যান এ কাজ করতে পারে। সংবাদ প্রকাশ করায় তারা এর আগেও অনেক হুমকি-ধামকি দিয়েছিল। এই মুহূর্তে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পার্সেল পাওয়ার পর বিষয়টি পীরগঞ্জ থানার ওসিকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরপিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নান বলেন, দাফনের কাপড়সহ হত্যার চিঠি পাঠানোর ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। সেই সঙ্গে সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
সিটি প্রেসক্লাব রংপুরের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভয়কে জয় করেই সাংবাদিকরা কাজ করছে। তাই ভয় দেখিয়ে সাংবাদিকদের কণ্ঠস্বর রোধ করা যাবে না। সাংবাদিক মাহমুদুল হাসানকে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে যে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে, আমাদের ক্লাবের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সঙ্গে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ, যারা কাফনের কাপড় পাঠিয়ে সাংবাদিকের কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা করেছে, তাদের খুঁজে বের করে আইনের হয়তো এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, হত্যার হুমকির বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কাজ করছি। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যেই হুমকিদাতাদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।