রংপুর বিভাগ

রংপুরের পীরগঞ্জে প্রাণ ফিরেছে পিকনিক স্পট নীল দরিয়ার

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি’র প্রুতিশ্রুতিতে রংপুরের পীরগঞ্জে দেড় কিলোমিটার নতুন পাকারাস্তা নির্মাণের ফলে প্রাণ ফিরেছে পিকনিক স্পট নীল দরিয়ার।

এক সময় উত্তর জনপদে প্রভাবশালী রাজারা রাজ্য শাসন করতেন। রাজবংশের শেষ রাজার নাম নীলাম্বর দেব। নীলাম্বর দেবের অনেক রাজধানী ছিল। এর মধ্য একটি পীরগঞ্জ উপজেলার চতরায় অবস্থিত। ৫৪ একর জমিতে জমিদারের রাজধানীকে সুরক্ষিত করার উদ্দেশ্যে চারিদিকে ৮০ হাত প্রস্তের গভীর পরীখা খনন করে রাজধানীর সীমানা সংলগ্ন ১৪ হাত প্রস্ত ও ১৪ হাত উচু করেন প্রাচীর নির্মাণ করেন রাজা নীলাম্বর।

১২’শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে প্রলংকরী ভুমিকম্পে পরীখার উত্তর পূর্ব এলাকা ভরাট হয়ে যায়। অবশিষ্ট তিন ধারের জলাশয়ের গভীরতার কারনে কালক্রমে এলাকাবাসী এটির নাম দিয়েছে নীল দরিয়া। চারিদিকে গভীর জলাশয়ের কারনে পরিত্যক্ত রাজধানীর সবগুলো ভবন মাটির নীচে দেবে যায়।

শত বছর ধরে পরিত্যক্ত থাকায় এক সময় মানুষ জনের কাছে এটি অপরিচিত হয়ে যায়। মাঝে-মধ্যে কেউ-কেউ সময় কাটানোর জন্য নির্জন এই স্থানটিকে বেছে নিতো। বন বিভাগ সেখানে বনায়ন করেন। এক সময় তা বিক্রিও করা হয়। এভাবেই বর্তমান প্রজন্মের কাছে নীল দরিয়া নজর কাড়ে। দাবি ওঠে চতরা হতে নীল দরিয়া পর্যন্ত রাস্তাটি পাকা করার।

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি চতরা এসে রাস্তাটি পাকাকরনের প্রতিশ্রুতি দেন। স্পিকারের প্রতিশ্রুতিতে সড়কটি পাকা করা হয় এবং নীল দরিয়াকে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে জেলা প্রশাসকের অনুকুলে স্লিপার ব্রেঞ্জ, দোলনা, ওয়াশ ব্লোক, ওয়াকওয়েসহ নানা কার্য সম্পাদনে ১ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়।

যোগাযোগ সুবিধা পেয়ে আশপাশের লোকজন দর্শনীয় ও পিকনিক স্পট হিসেবে এটিকে বেছে নিয়েছে। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ জানায়, রংপুর বিভাগ উন্নয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় চতরা শিশু ক্লিনিক হতে নীল দরিয়া পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে  ৩ মিটার প্রস্তের দেড় কিলোমিটার পাকা করে দেয়া হয়েছে। ভেতরের অংশে পার্ক ও বসার স্থান করে দেয়ায় বর্তমানে এটি পিকিনিক স্পট হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পায়।

পিকনিক স্পট হিসেবে বেড়াতে আসা আজাদুল ইসলাম, সুমন ও এমরান মিয়া বলেন, গত দুইবছর আগে এখানে এসেছিলাম ভ্যানযোগে। তাও আবার মাঝখানে পায়ে হেঁটে। আজ এসে দেখছি পাকারাস্তা তৈরি করা হয়েছে। এখন মিনিবাস বা পিক-আপের নিয়ে এখানে পিকনিক করতে আসা যাবে।

চতরা ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহীন জানান, সপ্তাহের ছুটির দিনসহ সবসময়ই নীল দরিয়া পর্যাটন কেন্দ্রে বেড়াতে আসে লোকজন। যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বলের কারনে চরম ভোগান্তিতে ছিল এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীরা। বর্তমানে নতুন পাকা রাস্তা নির্মাণের ফলে ভোগান্তি দুর হয়েছে। নতুন এই যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে পর্যটন কেন্দ্রে দূর-দুরান্ত থেকে আসা লোকজনের যাতায়াতের সুবিধা হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, পীরগঞ্জ উপজেলার মধ্যে নীল দরিয়া পর্যটন কেন্দ্রটি একটি জন গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখানে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ঘুরতে আসেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি’র পরামর্শক্রমে এই রাস্তাটি উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। সড়কটি উন্নয়ন  করায় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণ হয়েছে।

সুত্রঃবাসস