নড়াইলে রিলে পদ্ধতিতে সরিষার আবাদ বাড়ছে
জেলায় দিন দিন রিলে পদ্ধতিতে সরিষার আবাদ বাড়ছে। দুই ফসলি জমিতে তিনটি ফসল চাষ করার অন্যতম উপায় রিলে পদ্ধতিতে চাষাবাদ। এ পদ্ধতিতে একটি ফসল জমিতে থাকাকালীন বিনা চাষে অন্য একটি ফসল রোপণ করা হয়। যার ফলে অর্থ ব্যয় ও পরিশ্রম অনেক কম হয়। আর এ পদ্ধতিতে যে ফসলগুলোর আবাদ হয় তারমধ্য অন্যতম হলো ধানের সাথে সরিষা চাষ। দিন দিন এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ বাড়ছে।
জানাগেছে, আমন ধান কাটার আগেই কৃষক জমিতে সরিষার বীজ বপন করেন। আবার এ সরিষার ঘরে তুলে আবারও নতুন করে বোরো ধান রোপণ করতে পারেন। ফলে আগে যারা শুধু আমন ও বোরো ধান চাষ করত তাদের জমিতে রিলে পদ্ধতি অনুসরণ করে বিনা চাষে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষার আবাদ করতে পারছে। এতে খরচ ও পরিশ্রম উভয় অনেক কম হওয়ায় কৃষক ব্যাপকভাবে লাভবান হওয়ায় দিন দিন তারা এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় ১২ হাজার ৮’শ ৫৭ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষমাত্র নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ৮’শ ৮৮ হেক্টর জমিতে। লক্ষমাত্রার চেয়ে ৩১ হেক্টার বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার হেক্টর জমিতেই রিলে পদ্ধতিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুন বেশি জমিতে রিলে পদ্ধতিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে ৩ হাজার ৬’শ ৭৩ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরিষা চাষি সদর উপজেলার সীমানন্দপুর গ্রামের কৃষক ইশারত শেখ বলেন, আগে এক জমিতে দুই ফসল চাষ করতান। এখন তিনটি ফসল চাষ করছি। আগে শুধু আমন ও বোরো ধানের আবাদ হত, এখন সেই জমিতে আমনের ভেতর সরিষার বীজ ছিটিয়ে দিয়ে আরেকটি ফসল ধরে তোলা হচ্ছে।
লোহাগড়া উপজেলার ইশানগাতি গ্রামের আবদুর রহমান বলেন, এবছর ৪০ শতক জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। ভালো সরিষা হয়েছে, আশা করছি ভালো ফলনও হবে।
কালিয়া উপজেলার নোয়াগ্রামের বাদশা মিয়া বলেন, সরিষা চাষে তেমন কোন খরচ নেই, লাভ বেশি হয় তাই দিন দিন সরিষার আবাদ বাড়ছে।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ রোকোনুজ্জামান বলেন, ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় রিলে ফসল হিসেবে যে সরিষার চাষ, এটা আসলে খুবই কার্যকারী একটা ভূমিকা রাখছে আমাদের রিলে ফসলের আবাদ বৃদ্ধিতে। আমরা চেষ্টা করছি কৃষকদের মাঝে এ প্রযুক্তিটি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য। নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, জেলায় ১২ হাজার ৮’শ ৮৮ হেক্টর জমিতে এ বছর সরিষার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার হেক্টর জমিতেই রিলে পদ্ধতিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুন জমিতে রিলে পদ্ধতিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সুত্রঃবাসস