নড়াইলে বাণিজ্যিকভাবে ননী ফল চাষে সাড়া ফেলেছেন উদ্যোক্তা রবিউল
জেলায় বাণজ্যিকভাবে ননী ফল চাষে সাড়া ফেলেছেন রবিউল ইসলাম (৪৩)।ননী ফলের বৈজ্ঞানিক নাম মরিন্ডা সিট্রিফোলিয়া। জেলায় প্রথমবারের মতো ওষুধি গুণসম্পন্ন এ ফলের চাষ হয়েছে বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ননী ফল ও চারা কিনতে রবিউলের বাগানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। পলিনেশিয়ান ওষুধি উদ্ভিদ ননী ফল ক্যান্সার প্রতিষেধকসহ অ্যান্টিফ্যাঙ্গাল, অ্যান্টিটিউমার, অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি এবং শরীরে ইমিউনিটি বাড়ানোর কাজে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।রবিউলের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের ধাড়ীয়াঘাটা গ্রামের শামসুর রহমানের ছেলে এসিআই যশোর কৃষি প্রজেক্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম ২০২১ সালে প্রথমে বাড়ির পাশে ১৫ শতক জমিতে গড়ে তুলেন ওষুধি গুণসম্পন্ন ননী ফলের বাগান।চাকুরির সুবাদে তিনি ভারতে গিয়ে ননী ফলের বিশাল প্রজেক্ট দেখেন এবং জানতে পারেন এটি ক্যান্সারের প্রতিষেধক। এরপর ভারত থেকে চারা এনে বাগান গড়ে তোলেন।বর্তমানে তার বাগানে অফ্রিকান, ইন্ডিয়ান ও মালয়েশিয়ান জাতের প্রায় দুইশ ননী গাছ রয়েছে। ২০২২ সালের শুরু থেকে গাছ থেকে ফল পাওয়া শুরু করেন।গাছ লাগানোর পর ১বছরের মধ্যে গাছে ফল আসে।প্রতিকেজি ননী ফল ২হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করে থাকেন তিনি।ফল বিক্রির পাশাপাশি প্রতিটি চারা সাইজ ভেদে ৫শ’ থেকে ৮শ’ টাকা দরে বিক্রি করছেন।ফল ও গাছ বিক্রিতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পর আরো ২৫ শতক জমিতে ননী ফলসহ ওষুধি গাছ করোসাল ও ইনসুলিন উদ্ভিদ চাষের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান রবিউল।
তিনি আরও বলেন,বাগান শুরুর পর পরিচর্যায় তেমন কোনো খরচ নেই।পরবর্তীতে সামান্য সার ওষুধের প্রয়োজন হয়। গাছের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফলনও বাড়তে থাকে।
নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে রবিউল বলেন, ‘যে কেউ ননী ফলের চাষসহ ওষুধি গুণসম্পন্ন ভেজষ উদ্ভিদ চাষে এগিয়ে আসলে আমি তাকে সার্বিক সহযোগিতা করবো।ভেজষ উদ্ভিদ চাষ করে ব্যবসায় সাফল্যের পাশাপাশি মানুষের উপকারও হয়’।
মাইজপাড়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শোভন সরদার বলেন,রবিউলের বাগানে লাভজনক ননী ফলসহ ওষুধি গুণসম্পন্ন বিভিন্ন ভেজষ উদ্ভিদ উৎপাদনে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান বাসসকে জানান,ক্যান্সার প্রতিষেধকসহ শরীরে ইমিউনিটি বাড়ানোর কাজে ব্যাপক ভূমিকা রাখে ননী ফল।বাণিজ্যিকভাবে নড়াইলে এ প্রথম রবিউলের বাগানে ননী ফলের চাষ হচ্ছে।কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন।রবিউলের পাশাপাশি আরো কেউ ভেষজ উদ্ভিদ চাষে এগিয়ে আসলে তাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান।