দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে বেড়েছে রাজস্ব আয়
দিনিজপুর প্রতিনিধি :
দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে বেড়েছে রাজস্ব আয়। চলতি অর্থ বছরের এক মাসে এ স্টেশন থেকে রাজস্ব আয় হয় ২ কোটি ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪৭ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ লাখ ৪২ হাজার ৬৩৬ টাকা বেশি। ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি ও নিয়মিত টিকিট চেকিং এবং যাত্রী সেবার মান বাড়ায় রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিমত রেল কর্তৃপক্ষের।
দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শক মনজুর হোসেন এ তথ্য জানায়, তিনি বলেন, পঞ্চগড়-ঢাকা রুটে দিনাজপুর স্টেশন হয়ে মোট ৭টি ট্রেন নিয়মিত চলাচল করছে। এর মধ্যে আন্ত:নগর এক্সপ্রেস ৫টি এবং কমিউটার ২টি। আন্ত:নগর ট্রেনগুলোর মধ্যে দ্রুতযান, একতা, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস চলাচল করে পঞ্চগড়-ঢাকা রুটে, বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস চলে পঞ্চগড়-রাজশাহী রুটে, দোলনচাঁপা চলে পঞ্চগড়-সান্তাহার রুটে। অন্যদিকে বিরল-লালমনিরহাট রুটে দিনাজপুর কমিউটার এবং পার্বতীপুর-পঞ্চগড় রুটে চলে কাঞ্চন কমিউটার ট্রেন।
গতকাল রোববার রাতে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট এ বি এম জিয়াউর রহমান জানান, দিনাজপুর রেল স্টেশন থেকে গড়ে প্রতিমাসে ৭০ হাজার যাত্রীর নিকট টিকিট বিক্রি করা হয়। চলতি অর্থ বছরের গত অক্টোবর মাসে ৬৯ হাজার ৮০ জন যাত্রীর কাছে টিকিট বিক্রি এবং মালামাল তোলা ও খালাস করে আয় হয় ২ কোটি ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪৭ টাকা। ওই মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ কোটি ৪ লাখ ৯২ হাজার ১১১ টাকা। এছাড়া চলতি অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা। তবে চলতি বছরে গত ১৯ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার পরও এ স্টেশন থেকে গত ৪ মাসে (জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর) রাজস্ব আয় হয়েছে ৬ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫৭ টাকা। আমরা আশা করছি সব ঠিক থাকলে চলতি অর্থ বছরে রাজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
তিনি আরো জানান, গত ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে এ স্টেশন থেকে রাজস্ব আয় হয়েছিল ২০ কোটি ২৫ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭০ টাকা। এর মধ্যে টিকিট বিক্রি করা হয় ১৯ কোটি ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ২৪৮ টাকা এবং মালামাল তোলা এবং খালাস থেকে আসে ১ কোটি ৯ লাখ ৩১ হাজার ৫২২ টাকা। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে রাজস্ব আয় হয় ২১ কোটি ৫ লাখ ৩৩ হাজার ২৩১ টাকা। যার মধ্যে টিকিট বিক্রি থেকে আয় হয় ১৯ কোটি ২৮ লাখ ১০ হাজার ৬৮৩ টাকা। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে রাজস্ব আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৬৯ লাখ ৮ হাজার ১৪৭ টাকা। যার মধ্যে টিকিট বিক্রি থেকে আয় হয় ১৫ কোটি ৫০ লাখ ৮৫ হাজার ৯৪০ টাকা।
দিনাজপুর স্টেশন মাস্টার মোছা.ফারহানা ইয়াসমিন জানান, আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে যাত্রী সেবার মানবৃদ্ধি করা। আমরা সেই লক্ষ্যে নিয়মিত টিকিট চেকিং, প্লাটফর্ম পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ বিভিন্ন তদারিক করছি। যাতে কেউ বিনা টিকিটে ভ্রমণ করতে না পারে। তবে এ স্টেশনে ট্রেনগুলোর বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যার বিপরীতে যাত্রীদের চাহিদা কয়েকগুণ বেশি। টিকিটের বরাদ্দ বাড়ালে এ স্টেশন থেকে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।
দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্মে নিয়মিত হাটেন শহরের শিক্ষা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুক্তিযুদ্ধা মোঃ আব্দুল কাদের । তিনি জানান, অন্যান্য স্টেশনের চেয়ে দিনাজপুর রেল স্টেশনের পরিবেশ অনেক ভালো। প্লাটফর্মটি সব সময় পরিস্কার থাকে। তবে বাহিরে পার্কিং ব্যবস্থা আরো ভালো করা প্রয়োজন। তাহলে এ রেলওয়ে স্টেশনের সৌন্দর্য আরো বাড়বে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।