ঘন কুয়াশার দাপটে ঠাকুরগাঁওয়ের জনজীবন বিপর্যস্ত
জেলা প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও : তীব্র শীতে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের জনজীবনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হিমালয়ের কাছাকাছি অবস্থান হওয়ায় প্রতিবছর এই জেলায় শীতের প্রকোপ অনেক বেশি থাকে। এবছর অক্টোবর মাসে শীতের আমেজ শুরু হলেও নভেম্বরের দিকে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত ঠান্ডা অনুভূত হতো। তবে ডিসেম্বরের শুরুতে হালকা কুয়াশা ও হিমেল বাতাস অব্যাহত থাকলেও হঠাৎ করে ৯ ডিসেম্বর রাত ৯টা থেকে ঘনকুয়াশার দাপট অতিরিক্ত বেড়ে গেছে। এতে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালক থেকে শুরু করে পথচারী ও জনসাধারণ পড়েন চরম বিপাকে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাত নয়টার দিকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় উত্তরের এই জেলা। কুয়াশার এতোই ঘনত্ব যে যানবাহনের হেডলাইটও হার মেনেছে। লাইটের আলো ১০-১৫ গজ দূরত্ব অতিক্রম করতে পারছে না। সড়কে গাড়ি চালানো প্রায় অনোপুযোগী হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ঘটনার শঙ্কায় ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে দেখা গেছে চালকদের।
গাড়ি চালক স্বপন সরকার বলেন, কুয়াশার কারণে সড়কে চলা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ১০-১৫ গজ দূরে গাড়ির লাইটের আলোও কাজ করছে না।
এর আগে কখনো এতো ঘন কুয়াশা ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ দেখেনি। আগামী দিনগুলোতে আরও কুয়াশা ও শীত বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শীত আর ঘনকুয়াশার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষগুলো। রাস্তার ধারেই যে যা পারছেন খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতার জন্য আগুন পোহাচ্ছেন। অন্যদিকে ঠান্ডার প্রকোপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে বিশেষ করে ঠান্ডার কারণে নবজাতক ও কমবয়সী শিশুরা বেশি ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতালটি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও প্রতিনিয়ত প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ জনের ওপর রোগী ভর্তি থাকেন। সচরাচর শীতের সময় রোগীর বেশি চাপ থাকে। তবে এবার আগের মতোই রোগীর চাপ থাকলেও বর্তমানে বিশেষ করে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যাই বেশি। হাসপাতালটিতে ৪০ শয্যার শিশু ওয়ার্ড হলেও সোমবার রাত ১১ টার দিকে ১৩০ জনেরও বেশি রোগী ভর্তি ছিলেন। যা ধারণ শয্যার থেকে তিন গুণ বেশি বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিশু ওয়ার্ডে ভতিকৃত বেশিরভাগ শিশু ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন বলে জানান রোগীর অভিভাবক ও স্বজনরা।