ইসরাইলের হামলায় ফিলিস্তিনের শীর্ষ কর্মকর্তা নিহত
একের পর এক ইসরাইলের বিমান হামলায় রক্তাক্ত হচ্ছে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড। নিহত হচ্ছে নারী ও শিশুসহ অনেকে। সবশেষ ফিলিস্তিনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এবং তার পরিবারের ১৬ সদস্য নিহত হয়েছে। নিহত ওই কর্মকর্তার নাম মুহাম্মদ আল-নাজ্জার। দখলদার ইসরাইলি সরকারের করা অপরাধের নথিপত্র ও বিচারের জন্য গঠিত জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন তিনি। সোমবার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে এই খবর জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ইসরাইলি বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের এক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এই হামলায় তার পরিবারের মোট ১৬ সদস্য নিহত হয়েছে। তবে কোন অংশে এই বোমা হামলা চালানো হয়েছে বিবৃতিতে তা উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু এর আগে আল-জাজিরা আরবিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে খান ইউনিসের একটি বাসভবনে ইসরাইল বিমান হামলা চালিয়েছে।
এর আগে রোববার ফিলিস্তিনের ওয়াফা নিউজ অ্যাজেন্সি সূত্রে মিডল ইস্ট আই এক প্রতিবেদনে জানায়, বিমান হামলা চালিয়ে গাজার ৪৭টি পরিবার নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে ইসরাইল। এই পরিবারগুলোতে মোট পাঁচ শ’ সদস্য ছিল।
আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে ইসরাইলের বিমান হামলায় গাজায় কমপক্ষে দুই হাজার ৩২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন নয় হাজার ৭১৪ জন। নিহতের মধ্যে সাত শতাধিক শিশু ও পাঁচ শতাধিক নারী রয়েছে বলেও জানানো হয়।
এখন পর্যন্ত যত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৬৬ শতাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এ দিকে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটির পদাতিক বাহিনী গাজায় স্থানীয়ভাবে অভিযান চালিয়েছে। যদিও তারা দাবি করেছে, হামাসের অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। তবে নির্বিচার এসব হামলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অব্যাহত বিমান হামলার মধ্যেই গাজায় স্থল অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল। এর অংশ হিসেবে গাজা সীমান্তের কাছে তিন লাখ সেনা ও অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র জড়ো করেছে তারা। সম্ভাব্য স্থল অভিযানের আগে, গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে ১১ লাখ মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল। তাদের এমন নির্দেশনার পর কয়েক হাজার মানুষ সরে গেলেও, বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি তাদের নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা গাজার উত্তরাঞ্চলের এবং গাজা শহরের জনগণকে নিজেদের বাড়িতে থাকতে বলেছি। ইসরাইল বলেছে, শনিবারও তাদের পদাতিক বাহিনী এবং ট্যাংকগুলো, গাজা উপত্যকার অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়েছে।
এর আগে ইসরাইল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের ১০ লাখের বেশি বাসিন্দাকে ওই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।তবে হামাস জানিয়েছে, ইসরাইলের এমন হুমকিতে ভীত নন ফিলিস্তিনিরা। তারা ইসরাইলের আহ্বানে সাড়া দেয়নি।
এ দিকে শুক্রবার লেবাননে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হামলায় ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক ফটোসাংবাদিক নিহত এবং আলজাজিরা, রয়টার্স, এপিসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে বলে ঘোষণা করে। এরপর পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইসরাইল।
সূত্র : আল জাজিরা