শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের লক্ষ্য বাংলাদেশের
প্রথমবারের মত শ্রীলংকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচটি।
প্রথম দুই ম্যাচ শেষে সিরিজে ১-১ সমতা বিরাজ করছে। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকা ৩ রানে হারায় বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুড়ে দাঁড়ায় টাইগাররা। ৮ উইকেটের জয়ে সিরিজে সমতা ফেরায় শান্ত-লিটনরা।
এই প্রথম তিন ম্যাচের দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ-শ্রীলংকা। অতীতে দুই দলের মুখোমুখি হওয়া তিনটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজের সবগুলোতেই জয় পেয়েছে শ্রীলংকা। ২০১৩ সালে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অংশ নেয় দুই দল। ঘরের মাঠে এক ম্যাচ সিরিজের ১৭ রানে জিতেছিল শ্রীলংকা।
২০১৪ সালে ঘরের মাঠে শ্রীলংকার সাথে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে অংশ নেয় বাংলাদেশ। দু’টি ম্যাচ যথাক্রমে- ২ রান এবং ৩ উইকেটে জিতে নেয় লংকানরা।
২০১৮ সালে আবারও ঘরের মাঠে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে শ্রীলংকাকে আথিয়তা দেয় বাংলাদেশ। ৬ উইকেট এবং ৭৫ রানে সিরিজের ঐ দুই ম্যাচেই হেরে যায় টাইগাররা।
এবার জয় দিয়ে শ্রীলংকা সিরিজ শুরু করায় চাপে পড়ে যায় বাংলাাদেশ। কারন ২০২২ সাল থেকে কোন টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারেনি টাইগাররা। অবশ্য দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি জিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথমবারের মত দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ম্যাচ জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। এতে তৃতীয়টি সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে রূপ নেয়।
সব মিলিয়ে এই ফরম্যাটে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১৫ ম্যাচ খেলে ৫টিতে জয় এবং ১০টিতে হেরেছে বাংলাদেশ।
২০২২ সালের পর সংযুক্ত আরব আমিরাত, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, আফগানিস্তান এবং আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করে এই ফরম্যাটে নিজেরা যে দুর্বল দল নয় সেটি প্রমান করে টাইগাররা।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে আগামী জুনে শুরু হতে যাওয়া আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজ জয় বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাবে বাংলাদেশকে।
প্রথম ম্যাচে হারের পর দ্বিতীয়টিতে বাংলাদেশকে জয় এনে দিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ৩৮ বলে ৫৩ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে বাংলাদেশের জয়ে অবদান রাখেন টাইগার দলনেতা। ম্যাচ জয়ী ইনিংসের সুবাদে ফর্মও ফিরে পান তিনি। সদ্য শেষ হওয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) শান্তর অফ-ফর্ম চিন্তার ভাঁজ ফেলেছিলো বাংলাদেশ শিবিরে।
বোলারদের দারুণ নৈপুন্যে বড় সংগ্রহ দাড় করাতে পারেনি সফরকারী লংকানরা। দ্বিতীয় ম্যাচ জয়ে বোলারদের অবদানের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন শান্ত।
ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব বেশি ম্যাচ না খেলার পরও বল হাতে দুর্দান্ত পারফরমেন্সের জন্য বিশেষভাবে লেগ-স্পিনার রিশাদ হোসেনের প্রশংসা করেন শান্ত।
টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘অবশ্যই উন্নতি করেছে সে (রিশাদ)। তার বোলিং লাইন ভালো এবং ধারাবাহিকভাবে এক জায়গায় বল করতে পারে। বোলিংয়ের বৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করছে সে। যেভাবে বোলিং করছে, যদি এটি ধরে রাখতে পারে তাহলে আগামী দিনে আরও ভালো বোলিং করতে পারবে রিশাদ।’
শান্তর মতে, সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে বোলারদের পারফরমেন্স গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
একাদশে পরিবর্তনের তেমন কোন সম্ভাবনা নেই বাংলাদেশের। প্রথম দুই ম্যাচে একই একাদশ নিয়ে খেলেছে তারা। এজন্য শেষ ম্যাচেও একই স্কোয়াড ধরে রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।
দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশে একটি পরিবর্তন এনেছিলো শ্রীলংকা। স্পিনার আকিলা ধনাঞ্জয়ার জায়গায় দলে নেওয়া হয়েছিল পেসার দিলশান মাদুশঙ্কাকে। তৃতীয় ম্যাচেও পরিবর্তন আনতে পারে লংকানরা।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, এনামুল হক বিজয়, নাঈম শেখ, তাওহিদ হৃদয়, সৌম্য সরকার, শেখ মাহেদি হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তাইজুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, জাকির আলি অনিক।
শ্রীলংকা দল : হাসারাঙ্গা ডি সিলভা (অধিনায়ক), চারিথ আসালঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, দাসুন শানাকা, মহেশ থিকশানা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, নিরোশান ডিকবেলা, দিলশান মাদুশঙ্কা, নুয়ান থুশারা, মাথিশা পাতিরানা, আকিলা ধনাঞ্জয়া, বিনুরা ফার্নান্দো, কামিন্দু মেন্ডিস, আভিস্কা ফার্নান্দো, জেফরি ভান্ডারসে।