খেলার খবর

অ্যালেনের ১৬ ছক্কার বিশ্ব রেকর্ডে,আবারো উড়ে গেল পাকিস্তান

ফর্মে থাকা নিউজিল্যান্ড ব্যাটারদের থামাতে বিশেষ কিছুই করতে হতো পাকিস্তান বোলারদের। কিন্তু হলো উল্টোটা। ফিন অ্যালেনের তোপের সামনে অসহায় হয়ে পড়লেন শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফরা। তাদের রীতিমত তুলোধুনা করলেন কিউই ওপেনার। গড়লেন ১৬ ছক্কার বিশ্ব রেকর্ড। দল পেল বিশাল সংগ্রহ। যার ধারেকাছেও যেতে পারেনি পাকিস্তান। তাতে সিরিজ হারও নিশ্চিত হয়ে গেল সফরকারী দলটির।

সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ডানেডিনে ৪৫ রানে হেরেছে পাকিস্তান। ২২৫ রানের লক্ষ্যে ৭ উইকেটে ১৭৯ রানে আটকে যায় সফরকারীদের ইনিংস

এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড। সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচেও আগে ব্যাট করে জিতেছিল কিউইরা।

৬২ বলে ১৩৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন অ্যালেন। মেরেছেন ১৬টি ছক্কা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ডটি এত দিন এককভাবে ছিল হজরতউল্লাহ জাজাইয়ের দখলে। আফগানিস্তানের এ ওপেনার ২০১৯ সালে দেরাদুনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬২ রানের ইনিংস খেলার পথে মেরেছিলেন ১৬টি ছয়।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসও এটি। কিউই ওপেনার ভেঙেছেন ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫৮ বলে ১২৩ রান করা ব্রান্ডন ম্যাককালামের রেকর্ড।

বাউন্ডারি থেকেই অ্যালেন নিয়েছেন ১১৬ রান। দেশের হয়ে যা রেকর্ড। আগের রেকর্ড ছিল ম্যাককালামের (৯৬)।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের এই ফর্ম্যাটে অ্যালেনের ইনিংসটি পঞ্চম সর্বোচ্চ আর পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ। পাকিস্তানের বিপক্ষে আগের সর্বোচ্চও ছিল অ্যালেনেরই সতীর্থের। গত এপ্রিলে রাওয়ালপিন্ডিতে ৫২ বলে ১০৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন মার্ক চ্যাপম্যান।

অ্যালেন তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ৪৮ বলে। নিউজিল্যান্ডের হয়ে এটি তৃতীয় দ্রুততম। গ্লেন ফিলিপস ৪৬ বলে এবং কলিন মানরো ৪৭ বলে শতক করেছিলেন। ১৮তম ওভারে জামান খানের স্লোয়ারে বোল্ড হন তিনি। ম্যাচে এই একটি বলই ঠিকমত খেলতে পারেননি অ্যালেন। প্রথম ম্যাচে ১৫ বলে ৩৪ রান, দ্বিতীয় ম্যাচে ৪১ বলে ৭৪ রানের পর এবার আরও বিধ্বংসী ইনিংস উপহার দিলেন এই ডানহাতি।

সবচেয়ে বেশি তোপ পোহাতে হয়েছে হারিস রউফকে। এই পেসার হজম করেছেন ৬টি ছক্কা, এর মধ্যে এক ওভারেই তিনটি। সব মিলিয়ে ৪ ওভারে ৬০ রান দিয়ে রউফ পেয়েছেন ২ উইকেট।

চতুর্থ ওভারে ডেভন কনওয়েকে তুলে নেন রউফ। এরপর টিম সাউফার্টকে নিয়ে অ্যালেন গড়েন ৬১ বলে ১২৫ রানের বিধ্বংসী জুটি। যেখানে সাইফার্টের অবদান কেবল ২৩ বলে ৩১ রান। এরপর তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৫ বলে ১৯ রান গ্লেন ফিলিপ্সের। আসলে অ্যালেনের ব্যাট এতটাই উত্তাল ছিল যে, বাকিদের সঙ্গ দেওয়া ছাড়া কিছুই করতে হয়নি।

রান তাড়ায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় পাকিস্তান। এই ম্যাচেও দলকে যা একটু লড়াইয়ে রেখেছিলেন বাবর আজম। এই ডানহাতি টপ অর্ডার খেলেছেন ৩৭ বলে ৮টি চার ও ১ ছক্কায় ৫৮ রান। এ নিয়ে তিন ম্যাচেই ফিফটির দেখা পেলেন বাবর।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ বলে দুটি করে ছক্কা চারে ২৮ রান করেন মোহাম্মদ নেওয়াজ। তিনি শাহিনকে নিয়ে সপ্তম উইকেট গড়েন ২০ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ ৪০ রানের জুটি। সপ্তম উইকেটে যা পাকিস্তানের রেকর্ড জুটি। অধিনায়ক অপরাজিত থাকেন ১১ বলে ১৬ রানে।

বল হাতে নিউজিল্যান্ডের প্রত্যেকেই পেয়েছেন উইকেটের দেখা। ২৯ রানে ২টি শিকার ধরে সেরা বোলার টিম সাউদি। সবচেয়ে খরুচে ছিলেন ম্যাট হেনরি, ৪ ওভারে ১ উইকেট পেতে দেন ৫১ রান।

সিরিজের চতুর্থ ম্যাচ আগামী শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে।