রংপুর বিভাগ

মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় অন্ধত্ববরণের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভুল চিকিৎসায় অন্ধত্ববরণের অভিযোগ রংপুর নগরীর সাতমাথার মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ওই চিকিৎসক ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগি শামীম হোসেন।

আজ বুধবার দুপুরে রংপুর সিটি প্রেসক্লাবের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই অভিযোগ করেন তিনি। ভুক্তভোগির বাড়ি নগরীর খাসবাগ এলাকায়। তিনি মাহিগঞ্জ কলেজের নিম্মমান সহকারি-কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে কর্মরত।

লিখিত বক্তব্যে শামীম হোসেন বলেন, আমার ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে থাকলে গত ১৯ অক্টোবর বাড়ির পাশে সাতমাথাস্থ মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা.দেব দুলালের স্মরণাপন্ন হই। তার নির্দেশনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার চোখ-পরীক্ষা নিরিক্ষা করে চোখে ২৩.০ পরিমাপের ল্যান্স সংযোজন করতে বলেন। চিকিৎসক দেব দুলালের পরামর্শে গত ২২ অক্টোবর ২৫ হাজার টাকা প্রদান করে ডান চক্ষু অপারেশন করি। ওই দিনই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় বাড়ি যাই এবং পরের দিন চোখের ব্যান্ডেজ খুলে ফেলি এবং প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চোখে ড্রপ দেই। চোখের ব্যান্ডেজ খোলার পর সব কিছুই ঝাপসা দেখতে থাকি। এক সপ্তাহ পর দেখা করতে যাই ওই চিকিৎসকের কাছে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকের সাথে দেখা করার বিষয়ে গরিমসি শুরু করেন। চিকিৎসকের সাথে দেখার করার বিষয়ে অনড় থাকায় ওই চিকিৎসক দেব দুলাল তার চেম্বারে ডেকে নেন। চেম্বারে প্রবেশের সাথেই অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং চশমা ব্যবহার করলেই আপনার চোখ ঠিক হয়ে যাবে বলে পরামর্শ দেন। তখন আমার কাছে থাকা চিকিৎসাপত্রের ফাইল খুঁজে দেখি ২৩.০’র স্থলে ১৮.০ লেন্স সংযোজন করা হয়েছে। এমন গরমিলের বিষয়টি চিকিৎসকে বলার পর প্রথমে ফাইল খুঁজে পাচ্ছে না টালবাহানা করলেও পরে ফাইল দেখে ডা. দেব দুলাল এক পর্যায়ে ভুলের কথা স্বীকার করেন এবং পুণরায় লেন্স সংযোজন করার কথা বলেন, তবে চোখ ভালো হবার কোন নিশ্চয়তা নেই বলেও জানান। একই কথা অন্যান্য চক্ষু বিশেষজ্ঞগণও জানান। সেই সাথে “এই অপারেশনটি একবারের বেশি করা ঠিক নয়, এতে চক্ষুহানী হতে পারে” বলে জানান চিকিৎসকরা। এ কথা শুনে আমি হতাশ ও দিশেহারা হয়ে পরি।

ভুক্তভোগি শামীম হোসেন আরো বলেন, আমার জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন হলো কলেজের চাকুরি কিন্তু আমি বর্তমান অবস্থায় কম্পিউটারের সামনে বসতেই পারছি না। যার কারনে চাকুরিটিও হারানোর আশঙ্কাও রয়েছে। এসময় তিনি সাতমাথায় অবস্থিত মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা করে আর যেন কেউ তার মূল্যবান চোখের দৃষ্টি না হারায়।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগি রোগী তার চোখের অপুরনীয় ক্ষতির জন্য সিভিল সার্জন, জেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসনসহ আইন প্রয়োগকারি সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সেইসাথে চিকিৎসাপত্রের ফাইলটি খতিয়ে দেখে আলোচ্য প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার বিষয়ে মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালের ডিজিএম জাকির হোসেন কবীর বলেন, বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসক বলতে পারবেন। তাছাড়া উনি (ভুক্তভোগি) তো চোখে দেখেন। চোখে না দেখলে সংবাদ সম্মেলন করলেন কিভাবে। উনি এলাকায় কোন সহযোগিতা না পেয়ে আপনাদের (সাংবাদিকদের) কাছে গেছেন। পরে চিকিৎসক দেব দুলালের সাথে যোগাযোগের বিষয় বললে তিনি এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারবেন না বলে জানান।

সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগির পিতা আলা উদ্দিন, ছোট ভাই শাহীন হোসেন, ভুক্তভোগির স্ত্রী শাহানা বেগম ও প্রতিবেশী মজিবর রহমানসহ সাংবাদিকগণ।